ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০৪:০২ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

৫ মাসে ৬০ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, সীমান্তে চাপে বাংলাদেশ

repoter

প্রকাশিত: ১২:৫২:১৫অপরাহ্ন , ০৩ জানুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ১২:৫২:১৫অপরাহ্ন , ০৩ জানুয়ারী ২০২৫

ফাইল ছবি

ছবি: ফাইল ছবি

গত পাঁচ মাসে ৬০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে জানা গেছে। বর্তমানে সীমান্তে আরও লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

সীমান্ত-সংলগ্ন মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার এলাকা এখন আরাকান বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। বিশেষত মংডু শহর দখল করে নেওয়ায় নতুন সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রত্যাবাসনের আলোচনা চললেও কার্যত তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আরাকান আর্মি কর্তৃক মংডু দখলের ফলে বাংলাদেশের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি রাখাইন অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়িত করতে চায়। এ অবস্থায় সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নতুন করে অনুপ্রবেশ বন্ধ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশিষ্ট কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আমিনা মহসীন বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক কৌশলগত অবস্থান ধরে রাখতে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। মিয়ানমারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি।”

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এবং আরাকান আর্মি—এই দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বর্তমানে তুঙ্গে। আরাকান আর্মি দক্ষিণ রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা আন শহরের বেশিরভাগ অংশ এবং ৩০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে।

ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি মনে করেন, “আরাকান আর্মির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তবে অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের উপায় খুঁজে দেখা উচিত।”

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার সবসময় সজাগ রয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “সীমান্তে বিজিবি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। তবে কিছু দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করছে, যা বন্ধে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন, “মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্তমানে সীমান্তে আরাকান আর্মির প্রভাব থাকার কারণে সংকট আরও জটিল হয়ে উঠছে।”

রোহিঙ্গা ইস্যু শুধু বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমস্যা নয়, বরং এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি আঞ্চলিক সংকট হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করেন।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে সংকট সমাধানের উপায় খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে ভারত ও চীনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেছেন তারা।

repoter