
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
২০২৫-২৬ অর্থবছরে শিক্ষার পরিকাঠামো, পাঠ্যক্রম ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস সরকারের
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের শিক্ষা খাতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সুবিপ্রবি) দ্বিতীয় ধাপের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার শুধু পাঠদানভিত্তিক শিক্ষা নয়, একটি উন্নত ও সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক ল্যাবরেটরি নির্মাণ এবং ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ চালু করার মতো একাধিক প্রকল্প ইতোমধ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র সচিব আরও বলেন, আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্তত একটি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ থাকুক। শিক্ষার্থীরা যেন আধুনিক প্রযুক্তি ও বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শেখার সুযোগ পায়, সে লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি। পাশাপাশি ল্যাবরেটরি ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের কাজও চলছে। এসব অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের জন্য আলাদা প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে।
পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ নিয়ে তিনি বলেন, গত বছর আমাদের নতুন কারিকুলামের বই প্রস্তুত করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আমরা জানি, শিক্ষার্থীরা বই পায়নি বছরের শুরুতেই। তবে তা শুধু ছাপার বিলম্বে নয়, বরং রমজান মাসের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল না, ফলে তারা বইগুলো স্কুল ছুটির পর হাতে পেয়েছে। এ বিষয়ে আগামী বছর আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এবার আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি যাতে ডিসেম্বরেই শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন বই নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবনের নির্মাণসংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ এবং উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যানও সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ শুরু হবে। তবে তিনি এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করতে পারেননি।
পরিদর্শনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দিন, ডিন হারুন অর রশিদ এবং প্রক্টর ড. শেখ আব্দুল লতিফসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সিলেট বিভাগের একমাত্র গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে সুবিপ্রবিতে দ্বিতীয় ধাপের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার ‘বি’ ইউনিটে ৯২২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮১৬ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, যেখানে উপস্থিতির হার ছিল ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপে ‘সি’ ইউনিটে ২২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৫ জন অংশগ্রহণ করেন। তৃতীয় ধাপে আগামী ৯ মে অনুষ্ঠিতব্য ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশ নেবেন আরও ২ হাজার ৮৫৪ জন শিক্ষার্থী।
পরিদর্শন শেষে সিনিয়র সচিব শিক্ষাব্যবস্থার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার বিস্তারে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে পাঠ্যক্রমের বাইরেও প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন, গবেষণা ও উদ্ভাবনের দিকে জোর দিতে হবে, আর সে জন্যই শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
repoter