কমিটিতে পদ পদবী পাওয়া বড় কিছু নয় আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে সুন্দরভাবে সম্মানের সহিত দেশে ফিরেছেন এটাই আমাদের জন্য সবচাইতে বড় কমিটির বড় পদ পদবী পাওয়া। সম্প্রতি এমন এক বক্তব্যে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহসী এক বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু।
গাংনী উপজেলা বিএনপির ফাটাকেষ্ট খ্যাত আসাদুজ্জামান বাবলু। বিগত সরকারের আমলে ৩৪টি মামলা নিয়ে সর্বোচ্চ লড়াই সংগ্রাম করে ১৫ বছর অতিবাহিত করে বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিকে প্রাণের সঞ্চালন ঘটিয়েছেন এই আসাদুজ্জামান বাবলু। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সাথে তিনি কখনো আপসে যাননি। মেহেরপুর থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের স্বঘোষিত এমন কোন প্রোগ্রাম নেই, যেখানে আসাদুজ্জামান বাবলু ফ্যাসিষ্ট হাসিনার সকল প্রকার অন্যায় অত্যাচার নিপীড়ন হামলা মামলা উপেক্ষা করে রাজপথে উপস্থিত হননি। তাই মেহেরপুর জেলার ভেতরে সর্বোচ্চ ৩৪টি মামলার আসামি হয়ে বছরের অধিকাংশ সময়ই জেল হাজতে, কিংবা পুলিশি হয়রানির জন্য মাঠের ফসলের ভেতরে রাত কাটিয়েছেন আসাদুজ্জামান বাবলু। তিনি সাহারবাটি ইউনিয়নের তুমুল জনপ্রিয় তিন তিন বারের মত জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন সৎ, সাহসী ও যোগ্য চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অথচ বর্তমান ঘোষিত আহবায়ক কমিটি হতে তিনি হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, তার মত একজন দুঃসময় এর সাহসী নেতাকে রাজনীতি থেকে নিস্তেজ করার চিন্তাভাবনায় রেখেছেন বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। মেহেরপুর জেলাতে সম্প্রতি এমন একটা গুঞ্জন বেশি সমালোচিত, যে কমিটিতে থাকতে হলে, পদ-পদবি পেতে হলে বর্তমান জেলা আহ্বায়ক জনাব জাবেদ মাসুদ মিলন সাহেবের অনুগত হতে হবে নতুবা পদ পদবী পাওয়া যাবে না। এটা শুধু গুঞ্জনই না, ইতিমধ্যেই জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব যেভাবে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করেছেন সব জায়গাতেই কেবলই মিলটন সাহেবের অনুগত লোকদের ছাড়া দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের কোন প্রকারে পদ পদবীতে রাখা হয় নাই।
তাই কমিটি থেকে বাদ পড়া ত্যাগী নেতাদের দলের প্রতি আনুগত্য এবং নিবেদিত থাকতে তিনি ইউনিয়ন ভিত্তিক সিরিজ আকারে গণসংযোগ শুরু করেছে। তার ওই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৩/৫/০২৫ রোজ মঙ্গলবার তিনি গাংনী উপজেলার মঠমুড়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীদের কাছে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন, এ সময় মটমোড়া ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের বিএনপির মামলা খাওয়া নেতাকর্মীরা আসাদুজ্জামান বাবলুর কাছে অভিযোগ করেন যে "বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আমরা ঠিকমত বাড়িঘরে স্ত্রী সন্তানদের সাথে থাকতে পারি নাই বিভিন্ন মামলা ও পুলিশি হয়রানির ভয়ে মাঠে ঘাটে পালিয়ে বেরিয়েছি, দলের দুঃসময় রাজপথে থেকে লড়াই করেছি মার খেয়েছি, আজকে অথচ আজকে আমাদেরকে জাবেদ মাসুদ মিলটন সাহেব কমিটিতে রাখেন নাই কারণ আমরা অধিকাংশই আপনার সাথে এবং সাবেক সংসদ সদস্য জনাব আমজাদ হোসেনের সাথে বিএনপির রাজনীতি করি বলে। জেলা আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টন সাহেবের সার্চ কমিটির হতে এমন অবহেলিত আচরণ আমাদেরকে রাজনীতি থেকে নিরুৎসাহিত করেছে। মঠমুড়া ইউনিয়নের এক নং ওয়ার্ডের যখন তিনি যান, সেখানে সাবেক সেনা সদস্য মিলন নামের একজন বিএনপি নেতা বলেন যে আমরা গত ১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশের গুলি লীগের তান্ডব সকল প্রকার ও ভীতি উপেক্ষা করে জাভেদ মাসুদ মিল্টন ভাইয়ের আদেশে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে যায় এ সময় লীগের লোকজন আমার ছোট ভাই বিপ্লব হোসেন আমার বড় চাচা ফকির চাঁদ বিশ্বাস এবং আমার ভাতিজা কায়েস সহ 5 জন লীগের রোষানলের শিকার হই এবং আমাদেরকে প্রচন্ড পরিমাণে হকিস্টিক হাতুড়ি এবং বাঁশের লাঠি ও রড দ্বারা আঘাত করে, আমার বড় চাচার এক সাইড এখনও প্যারালাইজড, তারপর থেকেই ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাবেদ মাসুদ মিল্টন ভাই আমাদের কোন প্রকার খোঁজখবর নেননি । তারই অনুগত ইউনিয়ন যুবদলের নেতা শাহীন আমাদের গ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের বলেন যে, কমিটিতে পদ পদবি নিতে হলে মিল্টনের সাথে রাজনীতি করতে হবে, মিল্টনের বাহিরের কেউ পদ পদবি পাবেন না।এমনকি সদ্য গঠিত হওয়া কমিটিতে আমাদেরকে কোন প্রকার জানাশোনা কিংবা মূল্যায়ন না করে লীগের অনেক নেতাকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিএনপির কমিটিতে মূল্যায়ন করে পদবী দেয়া হয় অথচ আমরা যেন আজকে রোহিঙ্গা হয়ে গেছি জাভেদ মাসুদ মিল্টন সাহেবের কাছে তার সাথে রাজনীতি করিনা বলে, তাই আমরা আর রাজনীতি করতে চায়না। সেখানেই উপস্থিত উক্ত ওয়ার্ডের চরগোয়াল গ্রামের বিএনপির নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন আমি ইউনিয়ন বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক দিলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন সাবেক সদস্য এবং খুলনা বিভাগীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক ছিলাম, আমি বিএনপি করি বিধায় আমার বিডিআর চাকরি চাকুরী হারায় ।আমাকে বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগের দোসর পুলিশ দিয়ে মারধর করে ৬ টা অজ্ঞাত মার্ডারের মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আমার বাড়িঘরে নগদ টাকা মায়ের গহনাসহ গরু ছাগল বসতি আসবাব পত্র এবং মাঠের ফসল জোর করে আওয়ামীলীগের লোকজন লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তবুও দল থেকে দলের রাজনীতি থেকে সরে যায়নি, অথচ এখন আমাকে ওয়ার্ড কমিটিতেও কোনো পদের মূল্যায়নে রাখা হয়নি। তাহলে এত মামলা হামলা আর্থিক ক্ষতির পরেও রাজনীতি করে দল থেকে শেষমেষ এই অবদান পেলাম ? পরেই উক্ত ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সিন্দুরকৌটা গ্রামের সাবেক সেক্রেটারি ও বিএনপি নেতা জহুরুল ইসলাম আসাদুজ্জামান বাবলু কে বলেন " আমি হাসিনার আমলে ৯ মামলার আসামী হয়ে আপনার সাথেই জেলহাজত খেটেছি, লীগের লোকজনের সকল ভয় ভীতি উপেক্ষা করে আপনার সাথেই দলের সকল প্রোগাম করেছি। আজকের ওয়ার্ড কমিটিতে সামান্য সদস্য পদেও আমাকে রাখা হয়নি আপনার সাথে রাজনীতি করি বলে, অথচ বিগত ১৫ বছর ধরে যারা আওয়ামীলীগ করেছে, মামলা খায়নি, হাসিনার হয়ে আমাদের কে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেছে, তাঁরাই এখন বিএনপির কমিটির নেতা বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় আসাদুজ্জামান বাবলু তাদেরসহ উপস্থিত সকল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন "আমাদের জন্য সবচাইতে বড় পদ হলো আমাদের নেত্রী আজকে মুক্ত, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে সুন্দরভাবে দেশে ফিরে এসেছেন এর চেয়ে বড় কমিটি পাওয়া আমাদের মত বিএনপির প্রেমীদের আর কি হতে পারে ? আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান দেশে ফিরে আসায় হবে কমিটিতে পদ পদবী পাওয়া। ফ্যাসিস্ট আমলেও যখন রাজনীতি করতে ভয় করিনি এখন তো আমার নেত্রী মুক্ত, ফ্যাসিস্ট হতে মুক্ত আমরা সবাই তাহলে আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের জন্য সর্বোপরি দেশের জন্য আমরা কেন রাজনীতি করবো না ? অপেক্ষা করেন ধৈর্য ধরেন ষড়যন্ত্রের যে কালো মেঘ আমাদের উপরে বহমান আছে তা শীঘ্রই কেটে যাবে, কেননা আমাদের নেতা দেশনায়ক জনাব তারিক রহমান বলেছেন "আগামীতে ত্যাগী নেতাদেরকে মূল্যায়নে আনা হবে তাদেরকেই পদ পদবী দেওয়া হবে যারা হামলা মামলার সবচাইতে বেশি শিকার হয়েছেন তাদেরকেই মূল্যায়নে জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্বভার অর্পণ করা হবে"। সুতরাং দলের প্রতি আমাদের দেশ নায়ক তারেক রহমানের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস রাখুন তিনি দেশে ফিরে এলে অবশ্যই আপনাদের মত ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতাদের মূল্যায়নে রাখবেন"। আপনারা শুধু নিজেদের ভিতরে ঐক্য ধরে রাখুন জয় আপনাদেরই হবে।পরবর্তীতে তিনি উক্ত ইউনিয়নের সব ওয়ার্ডের নেতা কর্মীদের মাঝে কুশলাদি বিনিময় করে ১নং ওয়ার্ড বিএনপির অসুস্থ নেতা হাবিবুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ও মোহাম্মদ পুর গ্রামের আওয়ামীলীগের হামলায় আহত বিএনপির প্রবীণ নেতা জনাব চ্যাগা আলীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর সহ দলের পক্ষ হতে আইনি পক্রিয়ায় সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে রাত সাড়ে ১০ টায় তিনি মঠমুড়া ইউনিয়ন ত্যাগ করেন।এসময় তার সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মতিউর রহমান মোল্যা, জেলা জাসাস এর সেক্রেটারি সুলেরি আলভী, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান, যুবদল নেতা সহিবুল ও শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের জেলা সভাপতি মোঃ ইনজামামূল হক মিলন সহ বিএনপি নেতৃবর্গ।
- সংবাদদাতা: ইনজামামুল হক, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি।