বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণ করবে একমাত্র জনগণ। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন, সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এই ইফতারে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, গণমাধ্যমের সম্পাদক ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিজ, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আহমেদ মারুফ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেনসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল উলিয়াম মিলারসহ রাশিয়া, জাপান, কানাডা, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নরওয়ে, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল ও ইরাকের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "আমরা আশা করি, আমাদের বৈশ্বিক বন্ধু ও অংশীদাররা আমাদের সম্মিলিত উন্নয়নের জন্য 'অ-হস্তক্ষেপ', 'সার্বভৌমত্ব' এবং 'বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান'-এর নীতি মেনে চলবেন। গণতন্ত্র ও উদার বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমাদের অঞ্চলের সম্মিলিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই।"

তিনি আরও বলেন, "আজকের এই ইফতার অনুষ্ঠান আমাদের ন্যায়বিচার, স্থিতিস্থাপকতা এবং ঐক্যের মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ ভয়, নিপীড়ন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তামুক্ত একটি ভবিষ্যতের যোগ্য। সামনের পথ স্পষ্ট– একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন।"

বিএনপি মহাসচিব ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "এই অভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। এটি হঠাৎ করে আসেনি; বরং এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের দীর্ঘ সংগ্রামের অংশ। বিএনপি ও অন্যান্য গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এটি সমগ্র জাতির স্বাধীনতার প্রতীক এবং বাংলাদেশি জনগণের অদম্য চেতনার প্রমাণ।"

ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমানসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যে আরও বলেন, "আমরা জনগণের সঙ্গে আরও বেশি যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে চাই এবং আগামী দিনগুলোতে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

এই ইফতার অনুষ্ঠানটি বিএনপির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধির একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে