
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ভাতার পরিমাণ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বয়স্ক, বিধবা ও অন্যান্য ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার বিকালে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে জানিয়েছেন, দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক বৈষম্য হ্রাসের লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাজেটে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক ভাতা যেমন—বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিঃসঙ্গ নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, আশ্রয়হীন নারীসহ অন্যান্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের সংখ্যা ও মাথাপিছু বরাদ্দ উভয়ই বাড়ানো হচ্ছে। এর ফলে ভাতাভোগীরা স্বস্তি পাবেন এবং চলমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে ন্যূনতম জীবনযাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রান্তিক জনগণের জন্য বাস্তবভিত্তিক সহায়তা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ‘স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড’ ব্যবস্থার মাধ্যমে ৫৭ লাখ পরিবারের কাছে নিয়মিতভাবে মসুর ডাল, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করছে। তিনি বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে জনগণকে সুরক্ষা দিতে এ উদ্যোগ চলমান থাকবে। পাশাপাশি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ছয় মাসে উন্নীত করার প্রস্তাব করছি।’’
বর্তমানে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবার সহায়তা পাচ্ছে। বাজেট প্রস্তাবনায় আরও ৫ লাখ পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, এ উদ্যোগের মাধ্যমে আরও অধিকসংখ্যক মানুষ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক হবে।
অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তৃতায় আরও জানান, আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বিস্তার ও গুরুত্ব বিবেচনায় মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বাজেটে সরকারি পেনশন ব্যয় ছাড়াও কেবলমাত্র সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় থাকবে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার বরাদ্দ।
সরকার মনে করছে, এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফলে সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী আরও কার্যকরভাবে রাষ্ট্রীয় সহায়তা পাবে এবং প্রান্তিক মানুষের জন্য নিরাপদ জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সম্প্রসারণ ও বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দায়িত্ব পালনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছে।
repoter