
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
চাঁদাবাজি, মব উস্কানি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)-এর দুই নেতার পদ স্থগিত করেছে সংগঠনটি। আত্মপ্রকাশের মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি হামলা, চাঁদাবাজি এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সংগঠনটির ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি এবং নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাগছাস।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে বাগছাস। তবে আত্মপ্রকাশের দিনই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে সমালোচনার জন্ম দেয়। সর্বশেষ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া অপু ও সংগঠক কাজী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মব উস্কানির অভিযোগ ওঠে।
গোলাম কিবরিয়া অপুকে একটি ওয়াইফাই সরবরাহকারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে। ফোন রেকর্ডে শোনা যায়, অপু ওই ব্যক্তির কাছে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা চান, পরে দরকষাকষি করে ৩০ হাজার টাকায় সমঝোতা করেন। এই ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় শনিবার রাতে অপুর সদস্য পদ স্থগিত করে সংগঠনটি।
অন্যদিকে, কাজী মাজহারুল ইসলামকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে মব উস্কে দেওয়ার অভিযোগে পদ স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় মাজহারুল লাইভ ও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে উত্তেজনা তৈরি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে সংগঠনের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে তার সদস্যপদ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, "গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কোনো নেতাকর্মী যদি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি বা নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান দেব না। তাদের সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কারের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।"
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, "চাঁদাবাজি ও যেকোনো অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স দেখাব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা কাজ করে যাব। তবে যারা এই সংগঠনের নামে পূর্বের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরে যেতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব।"
ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, "জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় আমরা মধ্যমপন্থার রাজনীতি করব। আমাদের সংগঠনে কোনো উচ্ছৃঙ্খল আচরণের স্থান নেই। যারা সংগঠনের সঙ্গে বেইমানি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নেব।"
সংগঠনটি ইতিমধ্যেই দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে কঠোর নজরদারি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
repoter