বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকার ট্রাফিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার (৫ মে) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৬ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খালেদা জিয়া ঢাকায় পৌঁছাবেন এবং বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের বাসভবনে যাবেন। এ সময় তাকে শুভেচ্ছা জানাতে রাস্তায় ব্যাপক জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নির্ধারিত কিছু নির্দেশনা পালনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান-বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে অবস্থান না করে পথচারীদের ফুটপাতে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে জনসাধারণকে সড়ক থেকে সরিয়ে ফুটপাতে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ সময় যানজট এড়াতে গুলশান-বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত মূল সড়ক পরিহার করে বিকল্প সড়ক ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিকল্প রুট হিসেবে আব্দুল্লাহপুর-কামারপাড়া-ধউর ব্রিজ হয়ে পঞ্চবটী-মিরপুর বেড়িবাঁধ-গাবতলী সড়ক ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা ও মিরপুরবাসীদের জন্য বিকল্প রুট হিসেবে হাউজ বিল্ডিং থেকে জমজম টাওয়ার হয়ে ১২ নম্বর সেক্টরের খালপাড়, মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশন হয়ে মিরপুর ডিওএইচএস ও পঞ্চবটী হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ হয়ে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গুলশান, বাড্ডা ও প্রগতি সরণি এলাকার যাত্রীদের কাকলী, গুলশান-২ ও কামাল আতাতুর্ক সড়ক পরিহার করে গুলশান-১, পুলিশ প্লাজা, আমতলী ও মহাখালী হয়ে র‍্যাম্প ব্যবহার করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে বিমানবন্দর বা উত্তরার দিকে চলাচল করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলগামী যানবাহনকে মিরপুর-গাবতলী রোড ব্যবহার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিমানবন্দর বা ৩০০ ফিট সড়ক থেকে যারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবেন, তাদের বনানী বা কাকলী র‍্যাম্প না ব্যবহার করে মহাখালী বা এফডিসি র‍্যাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির অনুরোধে ঢাকা সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সেনানিবাস এলাকার রাস্তা যেমন জিয়া কলোনি, জাহাঙ্গীর গেট, সৈনিক ক্লাব ও স্টাফ রোড দিয়ে হালকা যানবাহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে।

এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত টোল প্রদান সাপেক্ষে সিএনজি ও মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে, তবে তা অবশ্যই ৪০ কিলোমিটার গতিসীমার মধ্যে থেকে এবং এক্সপ্রেসওয়ের বাম পাশের সেইফ লেন ব্যবহার করে চলাচলের শর্তে। ওভারস্পিড বা লেন পরিবর্তন ঠেকাতে যথেষ্ট সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

ডিএমপি যাত্রীদের ট্রেন ব্যবহারে উৎসাহিত করেছে। এজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো টঙ্গী, বিমানবন্দর ও তেজগাঁও স্টেশনে দুই মিনিট করে থামাবে। এছাড়া কমলাপুর-টঙ্গী রুটে একটি অতিরিক্ত শাটল ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ সময় বিদেশগামী যাত্রী ও হজযাত্রীদের পর্যাপ্ত সময় নিয়ে রওনা হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইভাবে, এই সময়কালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদেরও যথেষ্ট সময় হাতে রেখে বাসা থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা ও মিরপুরবাসীদের জন্য মেট্রোরেল ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি আরও জানিয়েছে, যারা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসবেন, তারা যেন কোনো ব্যাগ, লাঠি বা এই ধরনের কিছু বহন না করেন। সেইসঙ্গে তারা যেন কোনো যানবাহন নিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে যুক্ত না হন।

মোটরসাইকেল নিয়েও জনতার ভেতর দিয়ে চলাচল না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গুলশান-বনানী থেকে বিমানবন্দর সড়কে মোটরসাইকেলে অবস্থান না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে, তবে যদি জনসমাগম না থাকে, তাহলে অন্যান্য সাধারণ যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেল চলতে পারবে।

এই বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছে ডিএমপি।