
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে গভীর শোক প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) একদিনের শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে অর্ধদিবস ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক জরুরি বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন। উপাচার্য জানান, সাম্যর মৃত্যু বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে এবং প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান প্রকৌশলী, এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে উপাচার্য বলেন, "শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড আমাদের সকলকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা আগামীকাল দিনব্যাপী শোক পালন করবো। শিক্ষার্থীদের আবেগ, নিরাপত্তা এবং শ্রদ্ধাবোধের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।"
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনার বিচার দাবি করছে এবং ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতারে প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলেও উপাচার্য আশ্বাস দেন।
শাহরিয়ার আলম সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার আকস্মিক ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক, সহপাঠী এবং সহকর্মীরা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি ও তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। প্রশাসনের আশ্বাস অনুযায়ী, অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মোমবাতি প্রজ্বালন, মৌন মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে। তারা দাবি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, সাম্য হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রয়োজনে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে বিরাজ করছে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আবহ। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী শোক পালনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার সাম্যর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
repoter