
ছবি: সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে বাজার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ বেসামাল হয়ে পড়েছে। সাড়ে চারমাস ধরে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই, যা সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। বক্তারা জানান, দেশে লোমহর্ষক ঘটনার পরিমাণ বাড়ছে এবং এর ফলে একধরনের সামাজিক নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না তার বক্তব্যে বলেন, সরকার ভালো কিছু করতে পারছে না এবং জনগণের সংকট সমাধানে ব্যর্থ। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনে সরকার টিকে থাকলেও তাদের সঙ্গে কোনো খোলামেলা আলোচনা করে না। মান্না আরও বলেন, সরকারের মধ্যে একাধিক নীতিনির্ধারণী প্রতিষ্ঠান কাজ করে, কিন্তু তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি মনে করেন, সংকট নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হলে সমাধানও বের করা সম্ভব।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জনগণ এখনো সরকারকে সহ্য করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনের কারণে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পর কেন পুনরায় রাজপথে নামতে হবে? তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা মানুষের ধৈর্যের পরীক্ষা না নেয়। ক্ষুধার্ত জনগণের জন্য সংস্কারের প্রস্তাব কার্যকর হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। সাইফুল হক বলেন, সংস্কার যেন নির্বাচনের বিপরীতে গিয়ে না দাঁড়ায়।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু তার বক্তব্যে কুমিল্লায় এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, এটি মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার শামিল। তিনি অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজ মিয়া বলেন, সরকার অনেক কথা বললেও বাস্তবে বিশেষ কিছু করতে পারছে না। মানুষের স্বপ্ন যেন ভেঙে না যায়, সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করেন তিনি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল। সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবং জেএসডি সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজ মিয়া।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড ও প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়।
repoter