
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে ২২৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত মার্চ মাসে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। এপ্রিলের প্রবাহ এই ইতিবাচক ধারারই একটি ধারাবাহিক প্রকাশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২৯ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এই শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যা বর্তমানে প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এই রিজার্ভকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বাংলাদেশে মোট ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এই অংক গত অর্থবছর (২০২৩-২৪) একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। আগের অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে প্রবাসী আয় ছিল ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার। এই প্রবৃদ্ধি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে রেমিট্যান্স এখনো দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।
চলতি বছরের প্রথমদিকের রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়মিত ছিল। জানুয়ারিতে এসেছে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার এবং মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার। এর আগের মাসগুলোতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রেমিট্যান্স এসেছে—ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার এবং অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা বজায় রাখতে প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক গতি অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষা ও টাকার মান স্থিতিশীল রাখতে রেমিট্যান্স একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছিল গত ডিসেম্বরে, যখন দেশে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স প্রবাহিত হয়েছিল। এর পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫৩ কোটি ডলার। জানুয়ারি মাসেও দেশে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিট্যান্স, যার পরিমাণ ছিল ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার।
বর্তমান প্রবণতা বলছে, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আগামী মাসগুলোতেও দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
repoter