
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকীতে দোয়া মাহফিলে তারেক রহমানের বক্তব্য
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যারা দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক ও সমঅধিকারভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। তিনি বলেন, যারা শহীদ হয়েছেন, আমরা যেন তাদের আকাঙ্কাকে পূর্ণ করতে পারি, আর যারা জীবিত রয়েছি তারা যেন দেশকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তুলতে পারি, এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে তৌফিক কামনা করেন।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু সেই ধারাকে বিভিন্ন সময়ে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা প্রতিনিয়ত প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এই প্রতিরোধ ও সংকটে বহু মানুষ তাদের জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
শনিবার (৩১ মে) যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে লন্ডনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিলে ভিডিওবার্তায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন। এই দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কেউ কেউ স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এটা শুধুই রাজনৈতিক দমন-পীড়নের চিত্র নয়, বরং একটি জাতির বিরুদ্ধে পরিচালিত নির্মমতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ।
তিনি বলেন, খুব বেশি সময় আগের কথা নয়—আমরা যদি গত বছরের জুলাই-আগস্টের ঘটনা স্মরণ করি, তাহলে দেখতে পাব কীভাবে একটি পলাতক স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। সে সময় রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, নির্যাতন চালানো হয়েছে। বহু মানুষের চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চিরতরে বিকল করে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই সময়ে ৬৬ জন শিশু রাষ্ট্রদ্রোহের অজুহাতে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আজ যারা শহীদ হয়েছেন, যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে চাই, তাহলে আমাদের কর্তব্য এই দেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা। সেই লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, আমি সকলের কাছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদের জন্য দোয়া কামনা করি। আমরা যেন এদেশে ন্যায়, অধিকার ও জনগণের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি, সেই জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই।
উল্লেখ্য, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে শহীদ হন। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ও প্রবাসে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠন আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করে থাকে। যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরাও অংশগ্রহণ করেন।
repoter