ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০২:০৬ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

গর্তে থাকা ব্যক্তিরা এখন সংস্কারের তালিম দিচ্ছে: আমীর খসরু

repoter

প্রকাশিত: ০৬:৫৩:২৯অপরাহ্ন , ১৩ মে ২০২৫

আপডেট: ০৬:৫৩:২৯অপরাহ্ন , ১৩ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

গত ১৭ বছর যারা রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে আড়ালে ছিলেন, তারাই এখন সংস্কারের শিক্ষা দিচ্ছেন—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, যারা আজ সংস্কারের কথা বলছেন, তাদের অনেকের মুখও আমরা চিনি না। রাজপথে তাদের উপস্থিতিও দেখা যায়নি। শেখ হাসিনার শাসন দমন-পীড়নের মুখে এরা গর্তে ঢুকে পড়েছিল এবং আর সেখান থেকে বের হয়নি। আজ হঠাৎ গর্ত থেকে উঠে এসে এরা আমাদের সংস্কারের পাঠ পড়াচ্ছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। স্মরণসভাটি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই বিএনপি ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। সেই প্রস্তাব শুধু বিএনপির একক চিন্তার ফসল নয়, বরং দেশের সর্বস্তরের মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং একটি গ্রহণযোগ্য ভবিষ্যতের রূপরেখা। তিনি বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশকে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, সেই বিষয়ে সরকার কিছু বলছে না। কেন বলছে না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি মনে করেন যে শেখ হাসিনার পরিবর্তে এখন অন্য কারও মালিকানায় বাংলাদেশ চলে যাবে, এবং তারা দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ ভুল। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের মালিক একমাত্র দেশের জনগণ। জনগণের মতামত ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তই বৈধ নয়।

সংস্কার নিয়ে বিস্তারিতভাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো পরিবর্তনের জন্য জনসমর্থন অপরিহার্য। অতীতে কেউ জনগণের কাছে গিয়ে সংস্কারের প্রস্তাব দেয়নি, কিন্তু বিএনপি সেই ব্যতিক্রমী কাজটি করছে। কারণ, প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই টেকসই সংস্কার সম্ভব। শুধু কাগজে-কলমে বা সভা-সেমিনারে সংস্কারের কথা বললেই হবে না, সেটা মাঠে বাস্তবায়ন করতে হলে মানুষের অংশগ্রহণ লাগবে।

আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সরকার একটি মানবিক করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দেশের জনগণের মতামত ছাড়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারা আছে, সেই প্রশ্নের উত্তর সরকার দিচ্ছে না। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে, জনগণকে অবহিত না করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা নিঃসন্দেহে একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

আমীর খসরু আরও বলেন, একটি অনির্বাচিত সরকার আজ দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বসে আছে। তারা এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যার সঙ্গে দেশের জনগণের কোনও সম্পর্ক নেই। বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র জনগণের। তাই যে কোনো রকম পরিবর্তন বা সংস্কার আনতে হলে, তা হতে হবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

স্মরণসভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারাও বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন একজন সংগ্রামী এবং আপসহীন কণ্ঠস্বর, যিনি সব সময় গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলতেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার অভাব তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।

সভা শেষে বক্তারা সম্মিলিতভাবে বলেন, দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, একটি নিরপেক্ষ সরকার এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো। সবার কাছে আহ্বান জানানো হয়, রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার।

repoter