ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০২:০৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

কুয়েটে চলমান সংকট: শিক্ষকরা ক্লাসে ফেরেননি, বিক্ষোভে উত্তাল শিক্ষার্থী

repoter

প্রকাশিত: ০৭:১০:২৮অপরাহ্ন , ১৩ মে ২০২৫

আপডেট: ০৭:১০:২৮অপরাহ্ন , ১৩ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) চরম অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মে থেকে শিক্ষাকার্যক্রম চালু হওয়ার কথা থাকলেও এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ফেরেননি। এদিকে ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) জারি করায় ছাত্রদের মাঝে নতুন করে ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগের দিন রাতেও ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। তারা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেয়, যার মধ্যে ছিল—‘হামলা-মামলা-বহিষ্কার, মানি না মানবো না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘গোলামি না আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ’ ইত্যাদি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্বের ফলে কঠিন অবস্থানে পড়েছে। শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে হলে যেসব শিক্ষার্থী অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আবার শাস্তি দিলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে—এই উভয় সংকটে কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছিল, সেই ঘটনার বিচার আজও হয়নি। বরং আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা তারা কখনোই মেনে নেবেন না। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে, যার জবাব দিতে বলা হয়েছে ১৫ মে বিকেল ৫টার মধ্যে। শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান কালবেলা বলেন, কুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে, তারা হামলার শিকার হয়েছে, মামলা খেয়েছে। অথচ সেই ঘটনার বিচার না করে কিছু শিক্ষক নিজেদের ইগোর কারণে এখন পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে রেখেছেন। শিক্ষার্থীরা কোনো বেআইনি সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না বলে জানান তিনি।

এদিকে শিক্ষকরা তাদের অবস্থান বদলাননি। কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, যারা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে, তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাস পরীক্ষা কার্যক্রমে ফিরবেন না। এমনকি ১৬ মে’র মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষকরা প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকেও বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এখন তারা লিখিত জবাব দেবেন। যদি তারা তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডাতে সক্ষম হন, তবে শাস্তি এড়াতে পারবেন। অন্যথায় শাস্তির আওতায় আসবেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মানববন্ধনের মাধ্যমে দ্রুত বিচার শেষ করে স্বাভাবিক ক্লাসে ফেরার দাবি জানিয়েছে। শিক্ষকরাও চান বিচারকার্য শেষ হোক এবং শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়া হোক।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী দ্বন্দ্বের যে জটিলতা, তা এখন কুয়েটের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকেই স্থবির করে তুলেছে। প্রায় তিন মাস ধরে চলা এই অচলাবস্থা নিরসনে কোনো পক্ষই আপাতত সমঝোতার পথে নেই বলে মনে করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, আর শিক্ষকরা দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভবিষ্যৎ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।

repoter