
ছবি: বিএনপির নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু।
সম্প্রতি এমনই এক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুক প্রেমীদের ওয়ালে, যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন লীগের কর্মী 75 তম আওয়ামীলীগের জন্মদিনের কেক কেটে খেয়ে এবং মেহেরপুরের পৌর মেয়র রিটনকে মুখে তুলে কেক খাইয়ে দিয়ে ছবি তুলেছেন, আবার একই ব্যক্তি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টন সাহেবের কাছে এসে জায়গা করে নিয়েছেন। তাহলে কি মিলটন সাহেব আওয়ামী লীগের লোকজনের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিলেন ? এমনই হাজার প্রশ্ন চলছে মেহেরপুরের বিএনপির নেতা কর্মীদের ভিতরে।
তৃণমূল থেকে হাইকমান্ড পর্যন্ত সব জায়গাতেই একই সরব মেহেরপুর জেলা মানেই বিএনপি, বিএনপি অধ্যুষিত হচ্ছে মেহেরপুর জেলা। অথচ সম্প্রতি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হলে পুরো মেহেরপুর থেকে হাজারো ত্যাগী নেতাদের অভিযোগ নতুন গঠিত এই কমিটি নিয়ে।কারণ প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটিতে লীগের পুনর্বাসন ঘটিয়েছেন জেলা আহবায়ক। তাহলে প্রশ্ন উঠেই আসে—আসল বিএনপি কোথায়? আর কারা আসলে দলের চালিকাশক্তি? এই প্রশ্ন সামনে এসেছে জেলা কমিটির আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টনের নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে চরম অসন্তোষ থেকে।
এ ব্যাপারে গাংনীর ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতা, এবং গাংনী উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি জনাব আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন -“ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নে না এনে কতিপয় স্বার্থবাদী আওয়ামী প্রেমীর নেতাদের সামনে এনে কমিটি গঠনের দায়িত্ব ভার দেন জেলা বিএনপির সভাপতি মিল্টন সাহেব। দলের ঘোষিত গঠনতন্ত্র না মেনেই নিজের একান্তই সুবিদার্থে কমিটির বাণিজ্যের মাধ্যমে করেছেন কমিটি গঠনের নামে লীগের পুনর্বাসন। আওয়ামীলীগের জন্মদিন পালনের কেক খাওয়ানো ব্যক্তির মিল্টন সাহেবের কাছে আশ্রয় পাওয়ার ব্যাপারে আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন "এটা জেলা আহ্বায়কের কাছে নতুন কিছু না। এমন অনেক প্রমানোই ভাইরাল আছে নেট দুনিয়ায়। উনার হাত দিয়েই লীগের পুনর্বাসনের কার্যক্রম দুরন্ত গতিতে ছুটে চলছে। বিএনপির একজন নেতা হয়েও আমি অপমানিত বোধ করছি যে, লীগের নেতারা লীগের ৭৫তম জন্মদিন পালন করে কেক কেটে খেয়ে আমাদের মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মিল্টন সাহেবের কাছে এসে হাত মুখ মোছেন, এর হতে লজ্জার আর কি হতে পারে বলেন দলের জন্য। আমি তৃণমূলের সকল অভিযোগ দলের হাইকমান্ডের কাছে উপস্থাপন করে যাচ্ছি। দলের সিদ্ধান্ত যেটা আসবে সেটাই আমরা তৃণমূল পর্যায়ে নেতা কর্মীদের নিয়ে করবো এবং আপনাদের মত মিডিয়া কর্মী ভাইদের কেও জানাবো ইনশা আল্লাহ্ "!
দলীয় সূত্র ও স্থানীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যারা এক যুগ ধরে রাজপথে মার খেয়েছে, মামলায় পড়েছে, তাদের নাম পাতার নীচে; অথচ যারা গতকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কেটেছে, আজ তারাই দলে গলা উঁচু করে বসে আছে।
“এটা কি বিএনপি, না মিল্টনের বানানো প্যাকেট পার্টি?”
জেলা বিএনপির ভিতরে ভাঙনের সুর এখন স্পষ্ট। নেতাকর্মীদের মুখে স্পষ্ট অভিযোগ—“আহ্বায়ক কমিটির নামে যদি আওয়ামী ঘরনার লোকজনকেই পদ দেয়া হয়, তাহলে আমাদের আন্দোলনের প্রশ্নই আসে না। তাহলে কি এই কমিটি আন্দোলনকে ধ্বংস করতেই বানানো?”
জেলা আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টনের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোতে গোপনীয়তা রাখা, ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ‘সেটিং’ করে পদ দেয়া,
এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ওয়ার্ড কমিটিতে রাখা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাদে এবং উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে বাস্তব পর্যালোচনা ছাড়াই কমিটি গঠন করার অভিযোগ।
নেতাকর্মীদের বার্তা “আমরা রক্ত দিয়েছি, মার খেয়েছি, মামলা খেটেছি। আজ আমাদের নামের বদলে তাদের পদ দেয়া হচ্ছে যারা গতকাল আওয়ামী লীগের অফিসে কেক খাচ্ছিল। তাহলে আন্দোলনে আমাদের জায়গা কোথায়?”
repoter