ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০১:৫২ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

মার্কিন-চীন বাণিজ্যে ৯০ দিনের যুদ্ধবিরতি, শুল্ক হ্রাসে ঐকমত্য

repoter

প্রকাশিত: ০৮:০০:১৩অপরাহ্ন , ১২ মে ২০২৫

আপডেট: ০৮:০০:১৩অপরাহ্ন , ১২ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ আলোচনার পর বাণিজ্যিক উত্তেজনার পথ থেকে সরে এসে অবশেষে ৯০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র চীন। সোমবার সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান। শুল্ক হ্রাসের এই পদক্ষেপকে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে, এবং চীন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামাবে। এই হারগুলো আগামী ১৪ মে থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য বলবৎ থাকবে। শুল্ক হ্রাসের এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে গড়পড়তা ১১৫ শতাংশ শুল্ক হ্রাস নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাজস্ব সচিব স্কট বেসেন্ট।

চুক্তির পেছনে দীর্ঘ আলোচনা পারস্পরিক সমঝোতার প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে বেসেন্ট বলেন, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে দুই দেশের মধ্যে এক প্রকার বাণিজ্যিক অবরোধ তৈরি হয়েছিল, যা কেউই চায়নি। তিনি বলেন, “আমরা বিচ্ছিন্নতা চাই না। বরং উন্মুক্ত, সহযোগিতামূলক বাণিজ্যিক সম্পর্কই আমাদের লক্ষ্য।”

ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। মার্কিন বন্দরগুলোতে চীনা জাহাজের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং চীনের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক চাকরি হারান। এই পরিস্থিতি শুধু দুই দেশের মধ্যেই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল।

চুক্তি অনুযায়ী, ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থায়ী অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক আলোচনার মেকানিজম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সংস্থা নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে যেকোনো বাণিজ্যিক জটিলতা সমাধানের চেষ্টা করবে। এই মেকানিজমের নেতৃত্বে থাকবেন মার্কিন রাজস্ব সচিব স্কট বেসেন্ট এবং চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হি লিফেং।

চুক্তির খবর প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক শতাংশ বেড়ে যায়, এবং ইউরোপ আমেরিকার বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত সোনার দাম একই সময়ে প্রায় শতাংশ কমে যায়।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই চুক্তিকে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব নিরসনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত পারস্পরিক শ্রদ্ধা সহযোগিতার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদিও এটি সাময়িক সমঝোতা, তবুও এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যকার অবনতিশীল সম্পর্কের মোড় ঘোরাতে পারে। তবে বাস্তবিক অগ্রগতির জন্য এই ৯০ দিনের সময়কালকে কাজে লাগিয়ে আরও দৃঢ়, সুদূরপ্রসারী চুক্তি করতে হবে—যা কেবল শুল্ক নয়, প্রযুক্তি, মেধাস্বত্ব, বিনিয়োগ কৌশলগত স্বার্থের ক্ষেত্রেও সমঝোতা আনবে।

চুক্তির ফলে বিশ্ব অর্থনীতি কিছুটা স্থিতিশীলতার আশ্বাস পেলেও, পরবর্তী সময়েই বোঝা যাবে—এই বিরতি সত্যিকার শান্তি বয়ে আনবে, নাকি এটি কেবল অস্থায়ী স্বস্তি।

repoter