
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেনেন্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য যেন নিজের রঙ ছড়ালো আরও একবার। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে যোগ হলো আরেকটি গৌরবময় অধ্যায়। মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে ও বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ও ১০৬ রানের বড় জয়ে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে টাইগাররা।
পুরো ম্যাচজুড়েই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ মিরাজের দৃঢ়তায় গড়ে তোলে পাহাড়সম রান। মিরাজ ব্যাট হাতে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে নিয়ে যান নিরাপদ স্থানে। টপ অর্ডার থেকে লোয়ার মিডল অর্ডার—সবার পারফরম্যান্সে দল পায় বড় সংগ্রহ। তবে নজর কাড়ে মিরাজের ইনিংস, যেটি দলকে দেয় মানসিক আত্মবিশ্বাস।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বোলাররা টানা আক্রমণে প্রতিপক্ষের উইকেট একের পর এক তুলে নেন। ইনিংসের শুরুতেই স্পিন ও পেসের দুর্দান্ত মিশ্রণে নাজেহাল হয়ে পড়ে সফরকারীরা। এখানেই আবার সামনে আসে মিরাজের নাম। বল হাতে দাপট দেখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান তিনি।
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস খুব বেশি লম্বা হয়নি। বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে তারা ফলো-অন করতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও বদলায়নি ছবিটা। মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট ঐক্যবদ্ধভাবে আক্রমণ চালালেও মিরাজ ছিলেন নিঃসন্দেহে নায়ক।
এই জয়ে শুধু একটি ম্যাচ নয়, দেশের ক্রিকেটে মিরাজের অলরাউন্ড দক্ষতা যেন আবারও প্রতিষ্ঠিত হলো। তরুণ এই ক্রিকেটার ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠে প্রমাণ করেছেন, তিনি দলের জন্য কতটা মূল্যবান।
বাংলাদেশের পক্ষে এমন জয় শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাসও বয়ে আনবে। মিরাজের মতো অলরাউন্ডারের পারফরম্যান্স তরুণদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক প্রশংসায় ভাসান মিরাজকে। তিনি বলেন, ‘মিরাজ অসাধারণ খেলেছে। এই জয় তার একক পারফরম্যান্সের বড় উদাহরণ।’
দর্শকরাও মুগ্ধ হয়েছে মিরাজের নৈপুণ্যে। গ্যালারিভর্তি দর্শকদের উল্লাসে মুখর হয়ে ওঠে চট্টগ্রামের স্টেডিয়াম।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য এই জয় শুধুই একটি সাফল্য নয়—এটি একটি বার্তা যে, সঠিক কৌশল ও মনোভাব নিয়ে খেললে যেকোনো প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করা সম্ভব। মিরাজ তার পারফরম্যান্স দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, ক্রিকেট মাঠে মনোযোগ, ধৈর্য ও দক্ষতা থাকলে যে কোনও অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিংয়ের সমন্বিত প্রয়াস, বিশেষ করে মিরাজের নেতৃত্বসুলভ পারফরম্যান্স, দলের জন্য আগামী ম্যাচগুলোর পথ আরও সুগম করে দেবে।
এই জয়ে সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল এক ধাপ। পরবর্তী ম্যাচেও একই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে মুখিয়ে থাকবে গোটা দল।
repoter