
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যদি জনগণ নির্বাচন নিয়ে আস্থা হারায়, তাহলে তার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্তমঞ্চে বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সমর্থনপুষ্ট একটি সরকার। কারণ ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে সাময়িক সরকারের প্রয়োজন হয়, যারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তবে, যদি এই সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা হারায়, তাহলে তার দায়-দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম, খুন, এবং নিপীড়নের মাধ্যমে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অনেকে পঙ্গু হয়ে এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। অথচ, বর্তমানে আন্দোলনের ইতিহাস নতুনভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এবং বিএনপির অবদানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। কিছু ছাত্রনেতা আন্দোলনের কৃতিত্ব নিজেদের বলে দাবি করছে, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কোনো প্রত্যাশা নেই। কারণ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকারই একমাত্র এসব সংকটের সমাধান দিতে পারে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে স্থিতিশীলতা ও সহনশীল পরিস্থিতি ফিরে আসবে, যেমনটি বিএনপির শাসনামলে দেখা গিয়েছিল।
তিনি আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছিল না, যার ফলে তাদের আমলে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। বিএনপির সময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং জনগণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে পারত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহমুব শ্যামল, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, ওলামাদলসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন। বিএনপির ডাকা এই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, যা দলটির সাংগঠনিক শক্তির বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
repoter