
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “সফলতা অর্জনের জন্য আমাদের এখনো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। আমাদেরকে অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।” মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃত্তি প্রশিক্ষণ” শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “যেকোনো মূল্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা জনসমর্থনবিরোধী কাজ করবে, তাদের আমাদের আন্দোলন ও কাঠামো থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে আমাদের সংগ্রাম ও অর্জন বৃথা হয়ে যাবে।” কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও প্রস্তাবনার উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি তারেক রহমান ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক লক্ষ্য ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য দলের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। এটি প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা যদি জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হই, তবে অবশ্যই এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। কেননা আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের সঙ্গে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।”
বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনগণের দুঃখ-কষ্ট লাঘবের মাধ্যমে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন করা—এমনটাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তিস্তা নদী নিয়ে বহু রাজনীতি হয়েছে। অথচ তিস্তা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প। এই নদীকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িয়ে আছে। কখনো অতিরিক্ত পানি, আবার কখনো চরম পানির সংকটে এই অঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগ পোহায়।”
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি সরকার গঠনের সুযোগ পেলে খাল খনন ও নদীশাসনসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ সুবিধা ও পানির সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো, কৃষক যেন শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি পায় এবং বন্যার সময় যেন ক্ষয়ক্ষতি কমে আসে। পরিকল্পিতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নই এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের পথ খুলে দেবে।”
দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আয়তনে বড় না হলেও জনসংখ্যার দিক থেকে এটি একটি বৃহৎ দেশ। প্রতিটি অঞ্চলের রয়েছে নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, যা আমাদের জাতিগত পরিচয়ের অংশ। বিএনপি অতীতেও সংস্কৃতি বিকাশে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।”
তিনি বলেন, “সংস্কৃতি ও খেলাধুলাকে প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যাতে শিশুরা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে। আমরা চাই পরবর্তী প্রজন্ম শুধু পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজ নিজ প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাক।”
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা এবং নেওয়াজ হালিমা আরলি। তারা সবাই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, সংগঠনকে তৃণমূল পর্যন্ত শক্তিশালী করতে হবে এবং ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বার্তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব—এমনটাই বিশ্বাস করেন তারা।
repoter