ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০৩:৪৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

ঐতিহ্য হারিয়ে নিস্তব্ধ মতিঝিল: বাণিজ্য কেন্দ্র থেকে ম্রিয়মাণ স্থবিরতায়

repoter

প্রকাশিত: ১২:২৫:২২অপরাহ্ন , ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১২:২৫:২২অপরাহ্ন , ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার একসময়ের ব্যস্ততম বাণিজ্য কেন্দ্র মতিঝিল ক্রমেই তার পুরনো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে থাকা বাণিজ্যিক ভবনগুলো এখন যেন এই এলাকার ম্রিয়মাণ অবস্থার প্রতীক। মতিঝিলের বিভিন্ন ভবনে নতুন ভাড়াটিয়া খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। একসময় যে এলাকায় ফ্লোর ভাড়া পাওয়া ছিল দুষ্প্রাপ্য ও মহামূল্যবান, সেখানে এখন ভবন মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেও ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন না।

মতিঝিলের পূর্বপ্রান্তের টিকাটুলির ইত্তেফাক মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে থাকা ৪০টি বাণিজ্যিক ভবনের মধ্যে ২২টিতেই ‘টু-লেট’ সাইন ঝুলছে। এর মধ্যে বহু ভবন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি পড়ে আছে। এদিকে ব্যাংক ও অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে স্থানান্তরিত হওয়ায় মতিঝিলের জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।

আদমজী কোর্ট এনেক্স বিল্ডিং-২ এর চিত্র থেকে মতিঝিলের বর্তমান অবস্থা বোঝা যায়। একসময় কর্মচাঞ্চল্যে পূর্ণ এই ১২ তলা ভবনটি এখন প্রায় খালি। ২০২০ সালে করোনা মহামারির পর এক ব্যাংক তাদের প্রধান কার্যালয় গুলশানে সরিয়ে নেওয়ার পর ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোর অন্ধকারে ডুবে আছে। একইভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এনেক্স ভবনও এখন ফাঁকা পড়ে আছে, যেখানে আগে দিনের বেলা ভিড় সামলানো কঠিন ছিল।

একসময় মতিঝিল ছিল ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা। কিন্তু এখন অনেক ব্যাংক গুলশান, বনানী, বা বারিধারা এলাকায় চলে গেছে। মতিঝিলের বেশ কয়েকটি ভবন মালিক জানিয়েছেন, কম ভাড়াতেও ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বিখ্যাত ভবনগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।

মতিঝিলের টয়েনবি রোডের মধুমিতা সিনেমা হল এবং অভিসার সিনেমা হলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও এই পরিবর্তনের শিকার হয়েছে। দর্শকের অভাবে সিনেমা হলগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মধুমিতা এখন মাঝেমধ্যে খোলে, আর অভিসার সিনেমা হল ভুতুড়ে ভবনে পরিণত হয়েছে।

তবে মতিঝিলের খাবারের হোটেলগুলো এখনো কিছুটা জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে। দেশবন্ধু হোটেল, ঘরোয়া এবং হিরাঝিলের মতো রেস্তোরাঁগুলোতে এখনো কিছু মানুষ নিয়মিত আসেন। পুরনো দিনের স্মৃতিকে ধরে রাখা এই রেস্তোরাঁগুলো মতিঝিলের একসময়কার জনপ্রিয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়।

রাতে মতিঝিল পুরোপুরি নিস্তব্ধ হয়ে যায়। দিনের কাজ শেষে এলাকা প্রায় জনশূন্য থাকে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে মতিঝিলের ফাঁকা রাস্তাগুলো শিশুদের খেলার মাঠে পরিণত হয়। একসময় বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত মতিঝিল এখন হারানো ঐতিহ্যের এক নিস্তব্ধ চিত্র।

repoter