ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০৩:২৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

পাহাড়ে গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রোবাংলার বড় উদ্যোগ

repoter

প্রকাশিত: ০৭:৫৭:৫৭পূর্বাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৭:৫৭:৫৭পূর্বাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে গ্যাসের সংকট কাটাতে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে পার্বত্যাঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা। প্রায় তিন দশক আগে প্রণীত উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করে একটি নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এ খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি পরামর্শক দল নিয়োগ দিতে চায় রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বড় পরিসরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা হবে।

পার্বত্যাঞ্চলে সম্ভাবনাময় ব্লক ২২বি
পেট্রোবাংলা প্রথমে বান্দরবানের থানচি, রুমা, আলীকদম এবং কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকায় অবস্থিত ব্লক ২২বি-তে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া এ ব্লকের আওতায় রয়েছে আনোয়ারা ও কাপ্তাইয়ের কিছু অংশও। পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ অঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। এর কারণ হিসেবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ত্রিপুরায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গ্যাসের মজুদ আবিষ্কারের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে।

বিদেশি বিনিয়োগে জোর দিচ্ছে পেট্রোবাংলা
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে স্থানীয় কোম্পানির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে নতুন পিএসসি খসড়ায় বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। পুরনো পিএসসি বিনিয়োগকারীদের জন্য যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল না। নতুন চুক্তি আকর্ষণীয় শর্ত যুক্ত করে বিদেশি কোম্পানিকে এ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার পরিচালক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, “স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দ্রুত পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই তা শেষ হবে। এরপর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে।”

গ্যাস অনুসন্ধানে প্রয়োজন ত্বরান্বিত উদ্যোগ
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, “পার্বত্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাশের ভারতের ত্রিপুরায় বিপুল গ্যাস মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। অথচ আমাদের দেশে ওই অঞ্চলে মাত্র ১৪টি কূপ খনন করা হয়েছে, যা যথেষ্ট নয়। অনশোর দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগটি প্রশংসনীয় এবং আরও আগেই তা করা উচিত ছিল।”

গুস্তাভসনের প্রতিবেদন ও বাপেক্সের উদ্যোগ
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কনসালট্যান্সি ফার্ম গুস্তাভসন অ্যাসোসিয়েটস ২০১১ সালে বাংলাদেশের স্থলভাগে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুদের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বান্দরবানের বরকল, বেলাছড়ি, মাতামুহুরী, চাংগুতাংসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের মজুদ থাকার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সক্ষমতার অভাবে এসব অঞ্চলে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব বলেন, “পেট্রোবাংলার উদ্যোগে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা গেলে অনুসন্ধান কাজে গতি আসবে।”

উৎপাদন বাড়াতে আন্তরিক উদ্যোগের প্রয়োজন
বর্তমানে দেশে উৎপাদনকারী গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা সীমিত এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। গ্যাস সংকট নিরসনে এলএনজি আমদানি করেও দীর্ঘমেয়াদে সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ পরিস্থিতিতে দেশীয় মজুদ থেকে গ্যাস উত্তোলনই একমাত্র টেকসই সমাধান বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাহাড়ে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমকে সামনে রেখে পেট্রোবাংলা ও বাপেক্স যৌথভাবে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। দেশীয় কোম্পানি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে এ উদ্যোগ সফল হলে দেশের জ্বালানি খাতের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে।

repoter