ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০১:১৫ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

পিলখানা হত্যাকাণ্ড ভারতীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র: ডা. তাহের

repoter

প্রকাশিত: ০৯:০৪:৪৪অপরাহ্ন , ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আপডেট: ০৯:০৪:৪৪অপরাহ্ন , ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত আওয়ামী লীগকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী সরকারের মদদে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড ভারতীয় স্বার্থান্বেষী বিডিআর সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, কিন্তু তাদের বিচার না করে নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের ওপর অবিচার করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে দণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পিলখানায় সেনাকর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা যায়।

তিনি বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলকে পাঁচটি বিষয়ে ঐক্যমত গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো আপস চলবে না, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে, জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং দেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে দেশকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, এই পাঁচটি বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করা গেলে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।

সভায় জামায়াত নেতা ডা. তাহের বলেন, সিঙ্গাপুরের একটি প্রতিনিধি দল জামায়াত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এলে তিনি জানতে চান, কীভাবে দেশটি এত দ্রুত উন্নত হয়েছে। প্রতিনিধি দলের একজন জবাবে বলেন, তারা একজন সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক নেতা পেয়েছিলেন, যিনি দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার পর দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব পেয়েছে, যার ফলে এখনো দেশকে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতা পায়নি, যার জন্য আজও লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই তথা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সংঘাত ও সংঘর্ষ পরিহার করে জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান জানান।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে আড়াল করতে নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি কালো অধ্যায়। এই ঘটনায় স্বাধীনতা যুদ্ধের চেয়েও বেশি সংখ্যক সেনাকর্মকর্তা নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেনাকর্মকর্তাদের হত্যা করা হলেও সেনানিবাস থেকে তখন কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, সেই সময় সেনাপ্রধান কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন পিকনিকের আয়োজনে, যেখানে বিরিয়ানি খাওয়ার পর সরকারের কিছু নেতা পিলখানায় যান। তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট প্রমাণ করে যে সরকারই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

সভায় কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির বলেন, সেদিন দরবার হলে শেখ হাসিনার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে যাননি। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী সে সম্পর্কে আগেই জানতেন বলেই তিনি সেখানে যাননি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শেখ হাসিনা পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতায় আসার পর পিলখানায় সেনাকর্মকর্তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে পাঁচটি উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে। প্রথমত, ৫৭ জন চৌকস সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা হয়েছে, দ্বিতীয়ত, দেশপ্রেমিক সেনাকর্মকর্তাদের সরিয়ে সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তৃতীয়ত, শেখ হাসিনা তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছেন, চতুর্থত, পুরনো বিডিআরকে ধ্বংস করে নতুন বাহিনী গঠন করা হয়েছে এবং পঞ্চমত, নতুন বাহিনী তৈরি করে তা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ঘটনা একটি ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এর পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তি কাজ করেছে। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলরুমে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। সভাটি সঞ্চালনা করেন দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান ও শামসুর রহমান, ঢাকা বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম এবং পল্টন থানা আমীর শাহিন আহমেদ খান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম, কর্মপরিষদের সদস্য সৈয়দ সিরাজুল হক, শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর শরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

repoter