ঢাকা,  সোমবার
১৬ জুন ২০২৫ , ০৭:২৮ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

repoter

প্রকাশিত: ০১:৫৩:১৫অপরাহ্ন , ১৪ জুন ২০২৫

আপডেট: ০১:৫৩:১৫অপরাহ্ন , ১৪ জুন ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, মাঠ পর্যায়ে সাধারণ পুলিশের হাতে রাইফেলের মতো অস্ত্র থাকলেও তাদের কাছে ভারি মারণাস্ত্র থাকবে না। শুধুমাত্র আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর মতো বিশেষায়িত ইউনিটগুলোই ভারি অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার পাবে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে রাজধানীতে অবস্থিত এপিবিএনের সদর দপ্তর পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে থানা পুলিশ, এপিবিএনসহ অন্যান্য ইউনিটের আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বিশেষায়িত ইউনিটগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নত অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিটি বাহিনীকে দায়িত্ব অনুযায়ী প্রস্তুত করা হচ্ছে যেন তারা স্ব-স্ব কার্যক্রমে পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে পারে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সাধারণ পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের কাছাকাছি থেকে সেবা প্রদান এবং সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখা। তাই তাদের জন্য হালকা অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও ভারি অস্ত্রের প্রয়োজন নেই। তবে কোনো অপারেশনে বিশেষ সহায়তা দরকার হলে তখন বিশেষ ইউনিটগুলোর সহায়তা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে গত ১১ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছে এবং এতে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। দেশের জনগণ এবারের ঈদ-উল-আযহা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পেরেছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পরিশ্রম ও সচেতন অবস্থানেরই প্রতিফলন। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে ঈদ উৎসব ছিল সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্ন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাই একটি নিরাপদ ও সচেতন সমাজ গড়ে উঠুক, যেখানে জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখবে এবং বাহিনীগুলোও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করবে। নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না।

তিনি আশ্বাস দেন, ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার যে কোনো প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় সর্বদা সক্রিয় থাকবে। দেশব্যাপী স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখাই সরকারের অগ্রাধিকার বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রতিটি বাহিনীকেই দক্ষ, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে শুধু অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয়, আন্তর্জাতিক মানেও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা প্রমাণিত হবে।

এছাড়া তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিশ্বাস করে, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা হাত ধরাধরি করে চলে। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি সম্ভব নয়। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত রাখতে হলে সমাজে শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য।

তিনি বলেন, সময়ের দাবি অনুযায়ী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তা এই পরিকল্পনারই সুফল। আগামীতে আরও আধুনিক ও জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গড়ে তুলতে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সফর উপলক্ষে এদিন এপিবিএন সদর দপ্তরে একটি সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সরকারের পরিকল্পনায় পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান। পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি বলেন, আমরা চাই এপিবিএনসহ অন্যান্য বিশেষ ইউনিটগুলো আরও প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল হোক। যেন তারা শুধু জাতীয় নিরাপত্তায় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারে। এই লক্ষ্যেই ভারি অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি শুধু তাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

এভাবেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা এলো যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে দায়িত্ব ও অস্ত্রের ব্যবহারে একটি পরিষ্কার কাঠামো থাকবে, যা নিরাপত্তার পাশাপাশি জনআস্থাও বৃদ্ধি করবে।

repoter