ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০৩:০৩ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

রাজশাহীর দুটি জলাভূমিকে ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা

repoter

প্রকাশিত: ০৯:১৬:২৫অপরাহ্ন , ০৭ মে ২০২৫

আপডেট: ০৯:১৬:২৫অপরাহ্ন , ০৭ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো সরকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিকে ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন শাখা-২ বুধবার পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রাজশাহী জেলার তানোর ও গোদাগাড়ি উপজেলার দুটি জলাভূমিকে অভয়ারণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিলজোয়ানা মৌজার ১.৬৫ একর জলাভূমি এবং গোদাগাড়ি উপজেলার বিলভালা মৌজার ১৫.০৮ একর জলাভূমিকে ‘জলাভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী কার্যকর হবে।

ঘোষিত দুটি জলাভূমি শীতকালে দেশি ও পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। বিলজোয়ানা ও বিলভালা জলাভূমিতে প্রতি বছর শীত মৌসুমে দেখা যায় নানা প্রজাতির জলচর পাখি। দেশি পাখির মধ্যে রয়েছে কালেম, কোড়া, ডাহুক, গুড়গুড়ি, জলপিপি ও জলময়ূর। পাশাপাশি পরিযায়ী পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, পাতি সরালি, বড় সরালি, পিয়াং হাঁস, খুন্তে হাঁস এবং ভূতি হাঁস।

শুধু পাখিই নয়, এসব জলাভূমিতে প্রায় শতাধিক পাখি প্রজাতির পাশাপাশি উভচর, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর বসবাস রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই দুটি জলাভূমি প্রাকৃতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল।

তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি সম্প্রসারণ, শিল্পায়ন এবং অন্যান্য মানবসৃষ্ট চাপে জলাভূমিগুলোর জীববৈচিত্র্য ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ে। অনেক প্রজাতির পাখি ও প্রাণী ইতিমধ্যে কমে গেছে বা স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং অনিয়ন্ত্রিত মানবিক হস্তক্ষেপের ফলে পরিবেশের উপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে বিলজোয়ানা ও বিলভালার প্রাণী ও পাখিদের জন্য একটি নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত হবে। অভয়ারণ্য ঘোষণার ফলে এই অঞ্চলে শিকার নিষিদ্ধ হবে, এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া এই উদ্যোগ গবেষণা, পরিবেশ শিক্ষা এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। শিক্ষার্থী, গবেষক এবং পরিবেশ সংরক্ষণে আগ্রহী ব্যক্তিরা এই অভয়ারণ্যে সরাসরি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার সুযোগ পাবেন। একইসঙ্গে স্থানীয় জনগণের মধ্যে পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে।

এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশবিদরা বলছেন, দেশের অন্যান্য জলাভূমিও যাতে পর্যায়ক্রমে অভয়ারণ্যে রূপান্তরিত হয়, সে বিষয়ে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয়।

ফলে বিলজোয়ানা ও বিলভালা এখন শুধু রাজশাহীর নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ের এক বিশেষ পরিবেশ সংরক্ষণ মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ভবিষ্যতে এই অভয়ারণ্যগুলো দেশের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

repoter