
ছবি: প্রতীকী ছবি
চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাউজান থানার নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী এবং সেকেন্ড অফিসার মো. আলমগীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে। রাউজান উপজেলা ও পৌর বিএনপি শাখার উদ্যোগে বিজয় মেলা উদযাপনের অনুমতির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে কমপক্ষে ১১ জন আহত হয় বলে উভয়পক্ষ দাবি করেছে।
রবিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন।
গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের পক্ষে মামলা করেন ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ রিজওয়ান হোসেন। তার মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ৩৯-৪০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাবের সুলতান কাজল এবং দ্বিতীয় আসামি মোহাম্মদ রেওয়াজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিপক্ষের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়, যাতে প্রায় ৮-১০ জন আহত হয়।
অন্যদিকে, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের পক্ষে যুবদল নেতা সাইফুদ্দিন রিবন মামলা দায়ের করেন। তার মামলায় উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিমকে প্রধান আসামি এবং পৌর বিএনপির নেতা আবু মোহাম্মদসহ মোট ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় আরও কিছু অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সাইফুদ্দিন রিবন বলেন, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে এবং তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, গোলাম আকবর খোন্দকারের সমর্থিত পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের বৈধ কার্যক্রমে বাধা দিতে এবং কেন্দ্রীয় অনুমোদিত কমিটিকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের মামলার প্রধান আসামি সাবের সুলতান কাজল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। তিনি দাবি করেন, রাউজানে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পথ তৈরি করতে তাদের সংগঠনকে টার্গেট করা হয়েছে।
রাউজান থানার ওসি এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, দুই পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, যা রবিবার রাতে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংঘর্ষ ও মামলা দায়েরের পর রাউজান এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং উত্তেজনা প্রশমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এই সংঘর্ষ এবং মামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাউজানে বিএনপির মধ্যে বিভক্তি এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এখন তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন এবং এর সমাধান কীভাবে হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
repoter