
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট-পিপিএ) স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি অফিসিয়াল পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে এ বিষয়ে অবহিত করেছে মন্ত্রণালয়।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২ মে) রূপপুর সাইট অফিসে এক ধন্যবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. হাসমত আলী, পিপিএস-এর চিফ এস এম মাহমুদ আরাফাত, প্রকল্পে নিযুক্ত বিভিন্ন বিভাগের ম্যানেজার, ডেপুটি ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. মো. জাহেদুল হাসান জানান, রূপপুর প্লান্টের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) সংক্রান্ত বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যথাযথ এবং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা হচ্ছে—এনপিসিবিএলের সাথেই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে। তিনি এ সিদ্ধান্তের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ড. হাসান আরও বলেন, ২০১৫ সালে প্রণীত ‘নিউক্লিয়ার অ্যাক্ট’ অনুযায়ী এনপিসিবিএল প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, রূপপুর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রের সব সম্পদ এবং দায়-দায়িত্ব এনপিসিবিএলের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ফলে, প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ যেমন এলএনডিসি ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবই এনপিসিবিএলের তত্ত্বাবধানে থাকবে। এসব দায়িত্ব এনপিসিবিএল যেহেতু পালন করবে, তাই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি এই সংস্থার সাথেই হওয়া যুক্তিযুক্ত এবং বাস্তবসম্মত।
পিপিএস-এর চিফ এস এম মাহমুদ আরাফাতও সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি এনপিসিবিএলের ম্যানেজমেন্টকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
এনপিসিবিএল একটি বিশেষায়িত অপারেটিং সংস্থা হিসেবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার এই সংস্থার মাধ্যমে রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে চায় বলে মত দেন সংশ্লিষ্টরা।
সভা শেষে উপস্থিত কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির এই সিদ্ধান্তকে সময়োচিত ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ভবিষ্যৎ পরিচালনা ও সফলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
repoter