
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রবিবার গঠিত এই কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
তিন সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারকে। অপর দুই সদস্য হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌ-পরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তদন্ত কমিটি ৭ মে তারিখে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আবদুল হামিদের থাইল্যান্ড গমনের পুরো প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করবে। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের গাফিলতি, অবহেলা বা নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে। যদি কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সুপারিশও দেবে কমিটি।
আবদুল হামিদ একজন হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে থাকা এমন একটি গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করতে সক্ষম হলেন, তা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও প্রশ্ন। সরকারপক্ষের নীরবতা ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। এই পরিস্থিতিতে ঘটনাটির তিন দিন পর গঠন করা হলো তদন্ত কমিটি।
কমিটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র, যন্ত্রপাতি ও তথ্য-প্রমাণ চাইতে পারবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ গ্রহণ করতে পারবে। কোনো সংস্থার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য বা সহায়তা চাইলে তারা তা প্রদান করতে বাধ্য থাকবে। তদন্তের স্বার্থে যদি প্রয়োজন হয়, কমিটি নিজে থেকেই সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে কো-অপ্ট সদস্য নিয়োগ করতে পারবে।
এছাড়া কমিটিকে প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক সহায়তা প্রদান করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। সবমিলিয়ে, এই কমিটির ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে জাতিকে একটি স্পষ্ট চিত্র উপস্থাপনের।
এই ঘটনায় প্রশাসনের ভেতরে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যে প্রশ্নগুলো উঠেছে, তা কতটা সত্য, এবং আদৌ কোনো গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃত সহযোগিতা হয়েছে কিনা, তা নির্ধারণ করাই এই তদন্ত কমিটির মূল লক্ষ্য। এখন দেখা যাক, কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি কীভাবে পরিষ্কার হয় এবং সরকারের করণীয় কী নির্ধারিত হয়।
repoter