
ছবি: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে এই প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া থমকে আছে, এবং বিষয়টি বেশ কিছু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতার মুখে পড়েছে।
দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’ কোনো অনুরোধ কার্যকর করা সম্ভব নয়। এই চুক্তির অধীনে যে সব ধারা রয়েছে, তার মধ্যে রাজনৈতিক কারণে যে কাউকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হয়। উপরন্তু, ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্কও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেদনটি জানায়, শেখ হাসিনা ভারতের জন্য চরমপন্থা দমনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
ভারতীয় সূত্রমতে, বর্তমান মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের চাপ থাকা সত্ত্বেও ভারত তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। বরং বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেশ কিছু মাস সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় ভারতীয় কূটনীতিকরা মনে করছেন, তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা ভারতের স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে। এ কারণে, প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভারতের নিজস্ব স্বার্থ ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে অতিথিদের সংবর্ধনা জানানোর ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপটে, বিষয়টি নিয়ে ধীরে এবং সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দালাই লামার উদাহরণ তুলে ধরে প্রতিবেদনটি বলছে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভারত অতীতেও অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে এখনো যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তার পেছনে মূলত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতা কাজ করছে। ভারতের জন্য তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন, তা একেবারে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। চরমপন্থা দমন থেকে শুরু করে আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ হাসিনা ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিলেন। ফলে, বাংলাদেশের সরকারের অনুরোধ থাকা সত্ত্বেও ভারত দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া তার জন্য অনিশ্চিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে যে সমস্ত জটিলতা রয়েছে, তার মধ্যে ভারতের ঐতিহ্যবাহী অতিথি সংবর্ধনার বিষয়টিও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উঠে এসেছে। দালাই লামার উদাহরণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত অতীতে অনেক নেতাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং নিরাপত্তা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ অত্যন্ত জটিল একটি ইস্যু এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের বর্তমান সরকার বিষয়টি নিয়ে সময় নিচ্ছে এবং রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
repoter