
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি কখনওই অন্যায়ভাবে অন্যের মত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করে না উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সরকারে থাকুক কিংবা বিরোধী দলে—এই নীতিগত অবস্থান বিএনপির চিন্তা-চেতনার অংশ বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
আজ রবিবার (৪ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয়। ষাটের দশক থেকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কাজ করেছেন, তাদের আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ইস্যুটি সামনে আসে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সেই সময় থেকেই আমরা প্রতিবাদ করেছি, আন্দোলন করেছি। সে সময় সংবাদপত্রগুলোতে একটা স্বকীয়তা ছিল, যেটা এখন অনেকটা কমে গেছে। তখনকার সাংবাদিকদের দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও পেশাগত আন্তরিকতা উল্লেখযোগ্য ছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের বাকশাল শাসনামলে দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থার ভেতর সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা হারায়। বিএনপিই প্রথম সেই অবস্থা থেকে সংবাদপত্রকে মুক্ত করে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সংবাদমাধ্যমগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেন এবং তাদের স্বাধীনতা প্রদান করেন। যদিও বিএনপিও ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত নয়, তবে তিনি দাবি করেন—সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অন্য যে কোনো রাজনৈতিক দলের তুলনায় বিএনপি বেশি কাজ করেছে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বর্তমানে একটি ট্রানজিশন পর্বে অবস্থান করছি। নানা ধরনের ঘটনা, টানাপোড়েন, সংঘাত, অস্থিরতা চলছে। তবে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের জন্য চিন্তা-ভাবনার মধ্যেও গণতন্ত্র থাকতে হবে। সংকট হলো—দেশে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র নেই। গত ১৫ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা শুরুর সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবীর, সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, এবং সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
আলোচনা সভায় বক্তারা দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
repoter