
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানে পরাজয়ের পর বিভক্ত বহরে ফিরলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা
দুইটি পরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের বেদনা বয়ে সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না দেখাতে পারায় দলকে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। বিভক্ত বহরে দেশে ফেরা এই দলের একটি অংশ সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
প্রথম বহরে দেশে ফেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক লিটন দাস, সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, তাওহীদ হৃদয়, তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম এবং তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। আরেকটি বহর একই দিন রাতে, আনুমানিক রাত এগারোটায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সফরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে গতকাল যে পারফরম্যান্স প্রদর্শিত হয়েছে, তাতেও হারের গ্লানি এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ভালো সূচনা করলেও, বোলাররা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষের আগ্রাসী ব্যাটিং থামাতে। প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ ১৯৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করালেও, পাকিস্তানের ব্যাটাররা সেই রান অনায়াসেই টপকে যায়। শেষ পর্যন্ত সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে ম্যাচ ও সিরিজ—দুইই হারতে হয় বাংলাদেশকে।
এই হারের ফলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দল। সিরিজে একের পর এক ভুল এবং প্রতিপক্ষের প্রাধান্য যেন ছাপ ফেলে গেছে বাংলাদেশ দলের মানসিকতায়। মাঠে কিছুটা উন্নতি হলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
সিরিজ শেষে হতাশা লুকাতে পারেননি অধিনায়ক লিটন দাসও। ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই আমরা বল ভালো করিনি। আগের দুই ম্যাচে ফিল্ডিং এবং ব্যাটিং ভালো করিনি। আজকে ব্যাটিং ভালো হয়েছে। অবশ্যই আমাদেরকে শিখতে হবে কীভাবে কোন ব্যাটারের বিপক্ষে কীভাবে বল করতে হবে। এসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”
এই সফরে ব্যাট হাতে কয়েকজন ব্যাটার মাঝেমধ্যে ঝলক দেখালেও দলের সমন্বিত পারফরম্যান্স অনুপস্থিত ছিল। বিশেষ করে বোলারদের দুর্বলতা এবং ফিল্ডিংয়ের সময় সুযোগ হাতছাড়া করার ঘটনাগুলো ম্যাচের গতিপথ বদলে দিয়েছে বারবার। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে দল ১৯৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে ব্যর্থ হয়।
এই পরাজয় জাতীয় দলের জন্য কেবল একটি সিরিজ হারের বার্তাই নয়, বরং ভবিষ্যতের প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। আগামীর আন্তর্জাতিক সিরিজ এবং টুর্নামেন্টে ভালো করার জন্য দলকে এখন আরও মনোযোগী হতে হবে, বিশেষ করে বল হাতে সঠিক পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
দলের পরবর্তী সূচিতে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর প্রস্তুতিতে নিজেদের পুনর্গঠন করতে না পারলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে বলেই ধারণা ক্রিকেট বিশ্লেষকদের।
দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল এই সফর থেকে অন্তত কিছু জয় ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করে ফিরবে দল। কিন্তু দুটি সিরিজে একটিও ম্যাচ জিততে না পারা দলটির জন্য আত্মসমালোচনার সময় এখন। সব দিক থেকেই পর্যালোচনা এবং সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা সামনে চলে এসেছে। এখন দেখার বিষয়, পরবর্তী সিরিজগুলোতে কীভাবে প্রস্তুতি নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এবং খেলোয়াড়েরা নিজেদের পারফরম্যান্স উন্নয়নের জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
repoter