ঢাকা,  সোমবার
১৬ জুন ২০২৫ , ০৮:১৫ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

টাঙ্গাইলে যমুনার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি, চরাঞ্চলে ঢুকছে পানি

repoter

প্রকাশিত: ০৭:১৯:২৯অপরাহ্ন , ০৩ জুন ২০২৫

আপডেট: ০৭:১৯:২৯অপরাহ্ন , ০৩ জুন ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

ভূঞাপুরের নিম্নাঞ্চলে আগাম জলাবদ্ধতার শঙ্কা, পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে এখনো নেই বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা


টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীর পানি গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত বাড়ছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের কারণে যমুনার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এতে উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বিভিন্ন নিচু এলাকায় আগাম পানি ঢুকে পড়ছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ মে থেকে যমুনা নদীর পানি প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার হারে বাড়ছে। ৩ জুন মঙ্গলবার সকালে পোড়াবাড়ী পয়েন্টে নদীর পানি আগের দিনের তুলনায় ৬৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার মাত্র ২ দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যাচ্ছে, যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে যেকোনো সময় পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙনেরও আশঙ্কা বাড়ছে। ভূঞাপুরের কিছু অংশে ইতোমধ্যে নদীতীর ভেঙে ফসলি জমি এবং বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, কিন্তু আগাম প্রতিরোধ বা ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয় না। তারা মনে করছেন, নদীতীর রক্ষাবাঁধগুলো সংস্কার বা সংরক্ষণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না, ফলে প্রতিবছর একই দুর্ভোগে পড়তে হয়।

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যদি এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে অতি শিগগিরই বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, কারণ তারা অনেকেই আগেই জমি এবং ঘরবাড়ি হারিয়ে ইতোমধ্যে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

এদিকে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নদীর পানি যে হারে বাড়ছে, তা বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে না। তিনি বলেন, এটি মৌসুমের প্রথম ধাক্কা এবং স্বাভাবিক নিয়মেই কিছুদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, বর্ষার দ্বিতীয় পর্যায়ে পানি আবার বাড়বে এবং তখন যদি পরিস্থিতি বন্যামুখী হয়, তাহলে জনসাধারণকে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।

প্রকৌশলী মতিউর রহমান আরও জানান, নদীভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল লজিস্টিক সহায়তা তাদের হাতে রয়েছে। মাঠপর্যায়ে কর্মীরা নিয়মিতভাবে পানি বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি মনিটর করছে এবং কোথাও তীব্র ভাঙন দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে, নদীভাঙনে ফসল হারানো এবং বাড়িঘর ঝুঁকির মুখে পড়ায় অনেক পরিবার আগাম নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা আশঙ্কা করছেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে দেরি হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাসহ যমুনার অববাহিকার এলাকাগুলো প্রতিবছর বর্ষাকালে অনিয়ন্ত্রিত নদীভাঙন ও আকস্মিক বন্যার মুখে পড়ে। একাধিকবার প্রতিশ্রুতি ও প্রকল্প নেওয়া হলেও টেকসই কোনো বাঁধ বা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ফলে বর্ষা এলেই এইসব এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ফিরে আসে।

বর্তমানে যমুনার তীরবর্তী জনগণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে এবং প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছে। যেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে তাৎক্ষণিক বন্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই এখন প্রশ্ন উঠছে—তারা প্রস্তুত তো? কারণ দ্বিতীয় দফা বর্ষা যখন শুরু হবে, তখন প্রয়োজন হবে আরও সমন্বিত এবং সময়োপযোগী ব্যবস্থাপনার।

জনগণের মাঝে এই মুহূর্তে যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা কাজ করছে, তা নিরসনে প্রশাসনের উচিত হবে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি রোধে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা। পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোর সুরক্ষায় প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জোরালোভাবে উঠে আসছে।

repoter