ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ জুন ২০২৫ , ০২:৩৯ মিনিট

Donik Barta

শিরোনাম:

* আবারও সক্রিয় মাস্ক সিন্ডিকেট, আতঙ্কে জনসাধারণ * উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু * যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী গণবিক্ষোভ * আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির * ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া * ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের * পুলিশ নয়, ভারি মারণাস্ত্র থাকবে শুধু এপিবিএনের কাছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা * জনগণের মতামত উপেক্ষা করে বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি * ঈদযাত্রায় খানাখন্দ ও বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব থাকলেও যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক: অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার * বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক ফাহামিদুলের, একাদশে নেই শমিত সোম

তুরাগ তীরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ: সংঘর্ষে তিনজন নিহত, আহত শতাধিক

repoter

প্রকাশিত: ০৩:৩১:১৫অপরাহ্ন , ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৩:৩১:১৫অপরাহ্ন , ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে তুরাগ নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলসহ ঢাকার কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর ও উত্তরা সেক্টর-১০ এলাকায় যে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল ২টা থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী (এনডিসি) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্সের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।"

নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তুরাগ তীরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা যোবায়েরপন্থি ও সাদপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় শতাধিক।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) এবং বগুড়ার তাজুল ইসলাম (৭০)। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। ময়দানের ভেতর থেকে যোবায়েরপন্থিরা এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে সাদপন্থিরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষের ফলে ময়দান এবং তার আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালালেও ততক্ষণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের পর থেকেই পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। ইজতেমা ময়দান ও সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ জনগণকে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ বা মিছিল করার চেষ্টা করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতো এবারও ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা থাকলেও এমন প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা আগে দেখা যায়নি। স্থানীয়রা সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তুরাগ নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বর্তমানে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

repoter