
ছবি: ছবি: সংগৃহীত
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে উভয় দেশের শেয়ারবাজারে বৃহস্পতিবার বড় ধরনের দরপতন দেখা দেয়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ায় ভারতের সেনসেক্স ও নিফটি সূচক উভয়ই প্রায় অর্ধ শতাংশের মতো পতন রেকর্ড করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জে আতঙ্ক আরও প্রকট আকার ধারণ করে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। ব্যাপক বিক্রির কারণে দরপতন এতটাই তীব্র ছিল যে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেয়ারবাজারে লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়।
পাকিস্তানের বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছয় শতাংশেরও বেশি কমে যায়, যা সাম্প্রতিক সময়ে একটি উল্লেখযোগ্য ধস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে দেয়, যার প্রভাব পড়ে মুদ্রাবাজারেও। মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান এক শতাংশেরও বেশি কমে যায়। পাকিস্তানি রুপিও একইভাবে অবমূল্যায়িত হয়।
উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলার অভিযোগ এনেছে, যা অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই ধরনের অভিযুক্ত সামরিক কার্যক্রম বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধরনের চিড় ধরিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও এই উত্তেজনা এবং এর ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করছেন, রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা অব্যাহত থাকলে তা ভবিষ্যতেও বাজারকে অস্থির করে তুলবে এবং দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক প্রবাহ ও বিনিয়োগ পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে দেশদুটির নীতিনির্ধারকদের কৌশলগত ধৈর্য এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো ধরনের উত্তেজনাকর বা আগ্রাসী রাজনৈতিক বক্তব্য ও কার্যক্রম বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও প্রতিকূল করে তুলতে পারে।
এদিকে, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরাও বাজার পর্যবেক্ষণে অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল অবস্থানে গেছেন। পরবর্তী দিনগুলোতে রাজনৈতিক অবস্থা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করে বাজার পরিস্থিতি কেমন হবে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে বিনিয়োগকারীদের অনেকে নগদ অর্থে রূপান্তর বা স্বল্প ঝুঁকির খাতে স্থানান্তরের কৌশল নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এই অস্থিরতা এবং হঠাৎ বাজার পতনের ঘটনাগুলো ভবিষ্যতে আরও স্থিতিশীল বিনিয়োগ নীতির প্রয়োজনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উত্তেজনা প্রশমনে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরু হওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমান পরিস্থিতি শেয়ারবাজারের পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং যদি রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হয়, তাহলে তার প্রভাব বিশ্ববাজারেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
repoter